রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করতে গিয়ে তাঁর ১২ জন সহপাঠী আহত হয়েছেন।
হামলাকারীরা নিজেদের শিবিরের নেতা–কর্মী পরিচয় দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও তাঁর সহপাঠীরা। তবে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলছেন, জামায়াতের নেতা–কর্মীরা তাঁকে থানায় সোপর্দ করেছেন। তবে তাঁদের নাম–পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনায় জামায়াত ও শিবিরের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন দুই সংগঠনের নেতারা।
ভুক্তভোগী আজিজুল হক আকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
এদিন রাতে আকাশকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় থানা–পুলিশ ৷ চিকিৎসা শেষে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে গতকাল দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সহপাঠীরা জানান, তাঁরা একই শিক্ষাবর্ষের ২৫ জন মিলে ট্রেনে পঞ্চগড় ভ্রমণের উদ্দেশে রাজশাহী রেলস্টেশন যান। বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেসে করে রাত ৯টায় যাত্রা শুরুর কথা ছিল। তবে ৯টা বেজে ২০ মিনিট পার হলেও ট্রেন না আসায় তাঁরা সবাই ট্রেনেই অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ অচেনা ২৫-৩০ ব্যক্তি এসে ট্রেনের জানালা দিয়ে তাঁদের কাছে বিভাগের নাম জানতে চায়। পরে শিক্ষার্থীরা বিভাগের নাম জানালে তারা বিভাগের এক ছাত্রলীগ কর্মী সানির খোঁজ করেন। শিক্ষার্থীরা জানান এই নামে তাঁদের সঙ্গে কেউ নেই।
অভিযুক্তরা তাঁদের এক শিক্ষার্থীকে দেখিয়ে বলে, ওই যে সানি। তবে ওই শিক্ষার্থী তাঁর পরিচয়পত্র দেখালে তারা আশ্বস্ত হয়। একপর্যায়ে তারা আকাশকে দেখে সন্দেহ করে এবং সানি ভেবে ধাওয়া করলে তিনি ট্রেন থেকে নেমে দৌড় দেন। সে সময় হামলাকারীরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আকাশকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে হকিস্টিক দিয়ে তাঁর মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে আকাশের মাথা ফেটে যায়। আকাশ জানান, তিনি ওই শিক্ষার্থী নন, যাকে শিবির খুঁজছে।
সহপাঠীরা আরও জানান, আকাশকে যখন ধাওয়া শুরু করে তখন তাঁকে বাঁচাতে তাঁর পেছনে বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীরাও দৌড়ে যান। এরপর আকাশকে ধরে অচেনা ব্যক্তিরা নানাভাবে মারধর শুরু করে। তখন শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাঁদের বন্ধুকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁরাও মারধরের শিকার হন। দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অচেনা ব্যক্তিদের ধস্তাধস্তি হয়। শিক্ষার্থীরা বারবার বলেন যাকে সন্দেহ করে মারা হচ্ছে, তিনি সানি না। তাঁদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় আকাশের মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয় অচেনা ব্যক্তিরা। পরে আকাশকে তাঁরা অন্য কোথাও নিয়ে যেতে চায় এবং শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার জন্য বলে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা জোরজবরদস্তি করলে তারা আকাশকে নিয়ে বোয়ালিয়া থানায় যায়। থানার সামনে এসে তারা নিজেদের শিবির বলে পরিচয় দেয় এবং আকাশকে থানায় রেখে তারা চলে যায়।
Leave a Reply