মো. রাসেল শেখ, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক নারী সদস্যকে (৫০) গণধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. ফারুক হুসাইন মোল্যাকে (৫০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে নড়াইলের আমলী আদালতের সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিন শুনানি শেষে ওই আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন,‘নারী ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ফারুক হুসাইন। এ ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গত রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার শুনানি শেষে ওই আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে আত্মগোপনে থাকা এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ফারুককে গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোরে মাগুরা জেলার শালিখা থানার হরিশপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।’
পুলিশ জানায়, গত ২৪ ডিসেম্বর সকাল থেকে টিসিবির মালামাল বিতরণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিকাল ৫টার দিকে স্থানীয় যুবক রজিবুল পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য ওই নারী ইউপি সদস্যকে ফোন করেন। এরপর তিনি টাকা আনতে তাঁর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের জনৈক মোক্তার মোল্যার বাড়িতে গেলে রজিবুল ও ওসমানের বড় ছেলে ফারুকসহ কয়েকজন তাঁকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এছাড়াও ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয় অভিযুক্তরা। এ ঘটনা ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার পাল্টা হুমকি দিলে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দেয়। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে ভয়ে তিনি কাউকে কিছু বলেননি। তবে তিনি অসুস্থ ছিলেন। অসুস্থতা বাড়লে পরদিন তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তিনি ছেলের নিকট তাঁর ওপরে নির্যাতনের বর্ণনা ও জড়িত ব্যক্তিদের নাম বলে গেছেন। এরপর গত ২৬ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে যশোর জেনারেল হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এরপর গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে সদর থানায় ওই নারী ইউপি সদস্যের ছেলে বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আরও দুজনকে।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-নড়াইল সদরের দৌলতপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে রজিবুল মোল্যা (৩০), সাত্তার মোল্যার ছেলে চঞ্চল মোল্যা (৩৫) এবং শহিদ মোল্যার ছেলে শফিকুল মোল্যা (৩৩)।