রাকিবুল ইসলাম রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
মানবাধিকার সুরক্ষায় বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান সংশোধনসহ ৯ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি)।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সুপারিশ মানবাধিকারকর্মীসহ দেশের ১৭ কোটি মানুষের দাবি। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এ সুপারিশ কার্যকর না করলে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি পালন করা হবে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার কাজী রেজাউল মোস্তফার সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের ডেপুটি গভর্নর সৈয়দ আজমুল হকের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের ডেপুটি গভর্নর আখতারুজ্জামান বাবুল, মোস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া, আবু মাসুম ফয়সাল, বিশেষ প্রতিনিধি, গোলাম কিবরিয়া মোল্লা, মোহাম্মদ মুক্ত রহমান, সিরাজুল ইসলাম বিপ্লব, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোঃ মাসুম, শামীম শেখ, ঢালী সুমন মাস্টার তাছাড়াও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা শাখার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধিগণ l যেমন : বগুড়া, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ , বরিশাল, গাজীপুর সহ প্রায় দুই শতাধিক সিনিয়র মানবাধিকার কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সেক্রেটারি জেনারেল বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত ৯ দফা সুপারিশে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিগত দিনে নিহত, নিখোঁজ (গুম) এবং আহত ক্ষতিগ্রস্ত মানবাধিকারকর্মীদের নামের তালিকা তৈরি ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
সুপারিশে আরও বলা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইন প্রণয়ন করে সাধারণ মানুষ যেন ন্যায়বিচার পেতে পারে এমন কমিশন গঠন,দেশের প্রকৃত ও সিনিয়র মানবাধিকারকর্মীদের কমিশনের সর্বস্তরের কমিটিগুলোতে সম্পৃক্তকরণ, বিগত স্বৈরাচার সরকার এবং কামাল উদ্দিন বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মানবাধিকার কর্মীদের উপযুক্ত ক্ষতি পূরণ দেওয়া, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সরাসরি হস্তক্ষেপে ও চাপ দিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের তিনটি রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রয়েছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্থগিত নিবন্ধনগুলো পুনরায় চালুর লক্ষে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ করা। স্বৈরাচার সরকারের দোসর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ফরমায়েশি বিচারপতি ও বিচারকদের তালিকা তৈরি করে অবিলম্বে তাদের অপসারণ, যেকোনো মামলার বিচারকার্য ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মানবাধিকার কর্মীদের নির্যাতনের প্রধান নির্দেশদাতা স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইন সচিব গোলাম সারওয়ার, ডিবি পুলিশ প্রধান হারুন-উর-রশীদ, পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার, ইন্সপেক্টর মাসুদ রানা, তেজগাঁও থানার ওসি ইন্সপেক্টর অপূর্ব হাসান এবং সর্বোপরি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহম্মেদ এবং তার পরিষদ ও অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মানবাধিকার কর্মীদের নির্যাতনে সরাসরি দায়ী। তাদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
Leave a Reply