সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের ১৭ বছরের শাসনামলে প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের সাথে সখ্যতা গড়ে সুযোগ-সুবিধা ভোগকারী নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আব্দুল্লাহ আল মামুন এখন বিএনপির বড় নেতা। ৫ আগষ্টের পূর্বে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে তাকে দেখা না গেলেও নারায়ণগঞ্জের এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার অনুসারী হওয়ায় ভাগিয়ে নেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতির পদ। বিদ্যুতের একজন সাধারণ কর্মচারী হয়েও কিভাবে এত বিপুল পরিমান অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
জানা যায়, আব্দুল্লাহ আল মামুনের গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার সদর থানা এলাকায়। চাকরী করেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী-ডিপিডিসি তে। পদবী একজন স্টোর কিপার। চাকুরির সুবাধে বসবাস সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায়। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন ওই সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপিদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে কর্মক্ষেত্রে অনিয়ম-দূর্নীতি, ভূমিদস্যুতাসহ নানান অপকর্ম গড়ে তুলেছেন শত কোটি টাকার অর্থ-সম্পদ। এসব অপকর্মের কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানা গেছে।
একটি সূত্রে জানা যায়, নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দিলেও বিগত আওয়ামীলীগের শাসনামলে আন্দোলন-সংগ্রামে তাকে মাঠে দেখা না গেলেও আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত মতিয়া চৌধুরী এবং শেখ হাসিনার উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য প্রয়াত মুকুল বোসের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল এই আব্দুল্লাহ আল মামুনের। ওই সময়ে লোক চক্ষুর অন্তরালে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল। ৫ আগষ্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গনঅভুত্থানের পর শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তিনি নিজেকে বিএনপির বড় নেতা হিসাবে আবির্ভাব ঘটিয়ে শুরু করে দখলবাজী।
অভিযোগ রয়েছে, গত ৩ মে শনিবার আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে বিদ্যুৎ মামুন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের আইলপাড়া এলাকার আব্দুল ফালু মিয়া ওরফে কালুর ছেলে ভুক্তভোগী মো: হযরত আলী গংদের ৯৫ শতাংশ জমি দখল করে নেয়। এ ঘটনায় একই দিন রাতে ভুক্তভোগী মো: হযরত আলী বাদী হয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে বিদ্যুৎ মামুন এবং তার ভাই মো: জামান মিয়াসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এরআগে ২০২১ সালের নভেম্বরে মিটার টেম্পারিং করে নিজের আল হেরা টাওয়ার নামে ১০ তলা ভবনের বিদ্যুৎ চুরির প্রমাণ পাওয়ায় আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে বিদ্যুৎ মামুন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরির দায়ে মামলা দায়ের করে সিদ্ধিরগঞ্জের ডিপিডিসি। অভিযানের পর তার ভবনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ডিপিডিসি।। মিটার টেম্পারিং করে তিনি ৫ লাখ ৮ হাজার ৫৮৬ ইউনিট বিদ্যুৎ কারচুপি করেছেন বলে উল্লেখ করা হয় মামলায়।
তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যু চুরি, অন্যের জমি জবর দখলসহ এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে বলেও জানা গেছে।
Leave a Reply