রাসেল শেখ, জেলা প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় মেয়ের বাবাকে না জানিয়ে মামারা বিয়ে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন মেয়ের বাবা। আর এ ঘটনা পরবর্তীতে রূপ নেয় সংঘর্ষে, উভয় পক্ষের অন্তত সাত জন আহত হয়েছেন। শনিবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চাচই (পশ্চিম পাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, জমাদ্দার বংশের কওসারের ছেলে ও মেয়ের বাবা শরিফুল (৪৫), শুকুরের ছেলে মনির (৪০), আসাদের ছেলে তানভীর, নবীর শিকদারের ছেলে শিমুল শিকদার (৩২), ইসহাক মোল্যার ছেলে রুমি (৪০) ও সুমি( ৩৮) ও কুদ্দুস মোল্যার ছেলে জিয়াবুল (৩০)। তারা সবাই লোহাগড়া উপজেলার চাচই গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আড়াই বছর আগে চাচই গ্রামের শরিফুল জমাদ্দারের ছোট মেয়ে ইতির বিয়ে দেন তার বাবা। পারিবারিক কলহের জেরে দীর্ঘ ২৭ বছরের বৈবাহিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটান শরিফুল ও হীরা। আপস মীমাংসার মাধ্যমে সামাজিক সিদ্ধান্ত হয় বিচ্ছেদের পর ছোট মেয়ে ইতি মামাদের বাড়িতে আর তার বড় বোন দাদা বাড়িতে যাতায়াত করবেন। ইতির বাবা মায়ের বিচ্ছেদের ছয় মাস পর তার স্বামীর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর ইতি চুক্তি মোতাবেক মামা বাড়িতে ওঠেন, এছাড়াও দাদা বাড়ি ও নানা বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় ইতি ছোট বেলা থেকেই নানা বাড়িতে ই থাকতেন। আরও জানা যায়, ইতির মামা মামুন মোল্যা, বিপুল মোল্যা ও ইতির চাচা প্রদীপ জমাদ্দার উপস্থিত থেকে গত সপ্তাহে তার বিয়ে দেন। ইতির বাবা শরিফুল জমাদ্দারের মতামত না নিয়েই বিয়ে দেওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ক্ষোভ ঝাড়েন। এক পর্যায়ে গত শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় ইতির বিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে জমাদ্দার বংশ ও মোল্যা বংশ মারামারি করে। শনিবার সন্ধ্যায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটাতে চাচই এলাকায় সালিশে মোল্যা বংশের প্রতিনিধিত্ব করেন জয়পুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম এম শরিফুল আলম এবং জোমাদ্দার বংশের হয়ে আরেক সাবেক চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বসেন। সালিশের এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরবর্তীতে উভয় গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয়রা আহতদের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মেয়ের বাবা শরিফুলসহ জিয়াবুল ও শিমুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেলে পাঠান চিকিৎসক। এ বিষয়ে রোববার (১৫ জুন) লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে। সেনা ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply