মনির হোসেন, বেনাপোল।
সারাদেশে ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে যশোরের শার্শা উপজেলায় এবার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল চরম বিপর্যয় ঘটেছে। এ উপজেলার ২৯টি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মধ্যে ৪ টি মাদ্রাসা থেকে একজন করে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র চারজন।
এদিকে সচেতন মহল ও অভিভাবকরা বলছেন ভিন্নকথা, তারা বলছেন বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই সঠিক মেধার যাচাই হয়েছে। তারা এ ফলাফল দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষকদের উদাসীনতা, মাদ্রাসায় সঠিকভাবে পাঠদান না করা, ভালো শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া, রাজনীতি নিয়ে বস্ত্য থাকা এবং শিক্ষকদের নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে না আসার কারণে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার আজ এই বিপর্যয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ২০২৫ সালের দাখিল পরীক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শার্শা উপজেলা থেকে অংশগ্রহণ করে ২৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৮৬ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩৭১ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৪২৫ জন। উপজেলায় গড় পাশের হার ৪৭.২ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র চার জন। ২৯টি মাদ্রাসার মধ্যে ফলাফল বিপর্যয়ে উল্লেখযোগ্য ১৪ টি মাদ্রাসা হলো, বসতপুর ফাজিল মাদ্রাসার মোট ২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে দুই জন, সামটা ছিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৩১ জনে ৯ জন, মহিষা পীর আব্দুস সোবাহান আলিম মাদ্রাসায় ৩৮ জনে ৮ জন, নাভারণ মহিলা আলিম মাদ্রাসায় ১৫ জনে দুই জন, বাগআঁচড়া মহিলা আলিম মাদ্রাসায় ১৭ জনে চার জন, বারোপোতা ছিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ১৪ জনে তিন জন, সোনানদিয়া গাতীপাড়া দারুসসুন্নাত দাখিল মাদ্রাসায় ৩০ জনে ৯ জন, কায়বা বাইকোলা উসমানীয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২২ জনে দুই জন, লক্ষনপুর দারুল হাদিস দাখিল মাদ্রাসায় ২০ জনে মাত্র এক জন, আমলাই মোহাম্মাদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২০ জনে দুই জন, লাউতাড়া রাবেতাতুল উলূম দাখিল মাদ্রাসায় ১৩ জনে দুই জন, ঘিবা দারুল উলূম দাখিল মাদ্রাসায় ১৮ জনে ৯ জন, নিশ্চিন্তপুর দাখিল মাদ্রাসায় ২১ জনে দুই জন ও রাড়ীপুকুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় ১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র এক জন পাশ করেছে।
সচেতন মহল বলছে, যে সকল মাদ্রাসায় ২/১ জন করে কৃতকার্য হয়েছে সরকারের উচিত এ সমস্ত মাদ্রাসার শিক্ষদের বেতন বন্ধ করা। প্রয়োজনে ওই মাদ্রাসা গুলো বন্ধ করে দেওয়া।
শার্শা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুজ্জামান জানান, ফল বিপর্যয়ের বিষয়ে ওই সমস্ত মাদ্রাসার সুপাররে কাছে মৌখিক ভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা এ বিষয়টি মাদ্রাসা বোর্ডকে অবহিতও করেছি। বোর্ড তাদের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত দেই তার অপেক্ষায় আমরা আছি।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান জানান, এ বিষয় নিয়ে তিনি খুব দ্রæত উপজেলার প্রতিটি মাদ্রাসা সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিদের ডাকবেন। এমন খারাপ ফলাফলের কারণ কি জানবেন এবং আগামীতে ভালো ফলাফল করার জন্য যা করা দরকার সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবেন। #
Leave a Reply