দেওয়ান মাসুকুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার, ১৭ জুলাই ২০২৫ : ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, “আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, তখন দেখেছি নবাব আলী ছফদর খান মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে দেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছেন। বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে কৃষক-শ্রমিক এবং চা-শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি আজীবন লড়াই করেছেন।
কিভাবে দেশের নীচতলার খেটেখাওয়া কৃষক, মজুর এর মাঝে একাত্ম হয়েছিলেন, তা সত্যি অবাক করার মতো। জমিদার পিতার ঐশ্বর্য্য, প্রাচুর্য্য, ক্ষমতা, বিলাসিতা কোন কিছুই তাকে আটকিয়ে রাখতে পারেনি। একেবারে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন সাধারণ কৃষকের মাঝে।”
আর্থসামাজিক ব্যবস্থার আমল পরিবর্তন অভিমুখী জনগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে একনিষ্ঠ সহযোদ্ধা, বৈষম্য আর শোষণ মুক্তির প্রবক্তা, বামপন্থী সংগ্রামী জননায়ক, কিংবদন্তি বিপ্লবী, কৃষক সমিতি ও ন্যাপ (ভাসানী) নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনতার রাজা হিসেবে খ্যাত নবাব আলী ছফদর খান রাজা সাহেবের ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বুধবার (১৬ জুলাই ২০২৫) বিকেলে উপজেলার রবিরবাজারস্থ সুলতান কমপ্লেক্সে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণসভা আয়োজক কমিটির আহবায়ক মাহমুদুর রহমান চৌধুরী ওয়েছের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার।
মোস্তফা জামাল হায়দার আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। সরকারের উচিত যেকোনো মূল্যে এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো। যারা হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত, তারা যে দলেরই হোক না কেন, তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে জুলাই অভ্যুত্থানের বিজয়ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়তে পারে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মরহুমের পুত্র ও সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাস খান, সাপ্তাহিক হক কথার সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারি, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান, সদস্য আব্দুল জলিল জামাল, জেলা গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, কৃষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালিক জিলা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহিউদ্দিন হোসেন, কুলাউড়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য সজল, পৃথিমপাশা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কমরেড আব্দুল লতিফ, ভূকশিমইল ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, নবাব পরিবারের সদস্য নবাব আলী বাকর খান হাসনাইন, নবাব আলী নকি খান, বিএনপি নেতা আকদ্দছ আলী মাস্টার, সমাজসেবক তোফায়েল চৌধুরী প্রমুখ।
এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “নবাব আলী ছবদর খান রাজা সাহেবের জীবন ছিল রাজনৈতিক। তিনি ছিলেন আর্থসামাজিক ব্যবস্থার আমল পরিবর্তন অভিমুখী জনগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে একনিষ্ঠ সহযোদ্ধা, বৈষম্য আর শোষণ মুক্তির প্রবক্তা।
সারাজীবন তিনি মাওলানা ভাসানীর অনুগত ছিলেন এবং তার রাজনীতিতে মূল বিষয় ছিল সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদ বিরোধিতা। তিনি মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন কৃষক সমিতি ও ন্যাপের নেতা ছিলেন। রাজা আলী ছফদর খান ছিলেন পুরোপুরি বামপন্থী সংগ্রামী জননায়ক। ব্যাপক অর্থে তিনি বিপ্লবী ছিলেন।”
Leave a Reply