1. abukowsarmithu@gmail.com : abuko wsarmithu : abuko wsarmithu
  2. admin@dainikgonotontro.com : gontadmin :
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
যুবদলের পক্ষ থেকে ২০২৫ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত নড়াগাতীতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি  গণঅভ্যুত্থানে নিহত দুই শহীদ শ্রমিক পরিবারের পাশে শ্রমিক দল জমির মালিককে বাদ দিয়ে সাধারণ কৃষকের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বগুড়া’র শেরপুর সরকারি কলেজে সরস্বতী পূজা নওগাঁয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক আটক নওগাঁয় ৩০ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও গুণীজনদের সম্মাননা শিবির ক্যাডার ছোট সাজ্জাদের সহযোগী জাবেদের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ! কোয়েপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে বক্তারা শিক্ষার্থীরা দেশের আলোকিত ভবিষ্যতের রূপকার শার্শায় গড়ে উঠেছে পুষ্টি নিরাপত্তায় মডেল বাগান

সক্রিয় রয়েছে জাল দলিলের সিন্ডিকেটের চক্র

  • প্রকাশিত : বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২৮ বার পাঠ করা হয়েছে

রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গীর মৌজার আশালয় আবাসন প্রকল্পের তিন কোটি টাকা মূল্যের আরএস ৬৫৮ নম্বর দাগের ২৭ শতাংশ জমি জাল দলিলের মাধ্যমে আতœসাতের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আবাসন প্রকল্পের সহকারী ব্যবস্থাপক মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল ১১ডিসেম্বর বুধবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের অধিনায়কসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করায় আবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের ধাপটে আবাসন প্রকল্পের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গীর মৌজার আরএস ২২৫ ও ৩৯২ নম্বর খতিয়ানের ৬৫৮ নম্বর দাগের ৩০৭ শতাংশ জমি রয়েছে। এই জমি থেকে ১৬০ শতাংশ জমি আবাসন প্রকল্প ক্রয় করে। ক্রয়কৃত জমির মধ্যে ২৭ শতাংশ জমি জবর দখলে নিতে হারিন্দা গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে জালিয়াত চক্রের সদস্য, ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী ও দুইটি হত্যাসহ বহু মামলার আসামী মিছির আলী জাল দলিল দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেন। জাল দলিলে দায়েরকৃত মামলা মিছির আলীর পক্ষে একটি রায় দেয় বিজ্ঞ আদালত। যে জাল দলিল আদালতে পেশ করেছে তার সঙ্গে টিআই নম্বরের কোন মিল নেই। মিছির আলী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আবাসন প্রকল্পের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে এই কান্ড ঘটিয়েছেন। এছাড়া প্রথমে মেয়ের নামে জমি প্রদান করে পরে মিছির আলী আবাসন প্রকল্পের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ঢাকা সাব-রেজিষ্ট্রার সদর রেকর্ড রুমের কার্যালয়ে উল্লেখিত দলিল নম্বরের তারিখ ঠিক রেখে নকল তুলতে দিলে বেরিয়ে আস থলের বিড়াল। আসল দলিলে দেখা যায় সেখানে দাতা গ্রহীতা ভিন্ন। সেই দলিলের তথ্যের সঙ্গে মিছির আলীর দলিলের তথ্যের কোন মিল নেই।
প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আবাসন প্রকল্পের ক্রয়কৃত জমির দলিল বানানোসহ নানাবিধ হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিছির আলীর বিরুদ্ধে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার পায়তার করার অভিযোগ ওঠেছে।
রূপগঞ্জে জাল দলিল করে তিন কোটি টাকার সম্পত্তি আতœসাতে পায়তারা করছে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। প্রতিবাদ করায় আবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হককে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এ ব্যাপারে গত ১ডিসেম্বর রূপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
জাল জালিয়াতির ঘটনায় এ জমি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য শালিস বৈঠক বসে। রূপগঞ্জ থানা পুলিশের মধ্যস্থতায়ও বৈঠক বসে। শালিস বৈঠকের বিচারকরা উভয়পক্ষের কাগজপত্রাদী দেখে আবাসন প্রকল্পের পক্ষেই রায় দেন। কিন্তু মিছির আলী সে রায় অমান্য করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। তার রয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার। তাই কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, জাঙ্গীর মৌজার ১৪৪নং খতিয়ানে এসএ ৫৯১ নম্বর দাগের ১৫৪ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন আমিন উদ্দিন, সামিন উদ্দিন, মালেকা বিবি, হালেমা বিবি ও আলেকা বিবি। পরে সেই জমি আরএস পর্চায় ৬৫৮ নম্বর দাগে রূপান্তরিত হয়। মালেকা বিবির নামে আরএস ৩৯২ নম্বর দাগে খতিয়ানভুক্ত হয়। মালেকা বিবি, হালেমা বিবি এবং আলেকা বিবির ওয়ারিশগণের ২০১৪ সালে ৩০৭০ ও ২৯৭০ নম্বর দলিলসহ ১৬০ শতাংশ জমি ক্রয় করে আশালয় আবাসন প্রকল্প। মিছির আলী ১৯৮০ সালে ২৬১২৭ নম্বর দলিলে এবং ১৯৮৫ সালে ৮৫৯৭ নম্বর দলিলে জমি বিক্রি করেন। এ সময় দেওয়ানী মামলা নম্বর ৭৪৪/১৭ এর রায়ের ফটোকপি প্রদান করেন। ২৬১২২৭ নম্বর দলিলে হালেমা বিবি দাতা হয়ে মিছির আলীর মা মোমেনা বেগমের কাছে বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে মোমেনা বেগমের কাছ থেকে ৮৫৯৭ নম্বর দলিলে মিছির আলী রেজিষ্ট্রি করে নেন। পর্যালোচনা করে দেখা যায় এ দলিল দুইটি জাল। পরবর্তীতে বিজ্ঞ চীফ-জুডিসিয়াল আদালতে ৭৯/২৪ নম্বর পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়। আদালত পিবিআই নারায়ণগঞ্জকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। পরে পিবিআইয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ চীফ-জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ২০১৪ এর ১০৯ বিধি অনুসারে দেওয়া দলিলের প্রতিলিপি প্রস্তুতিতে সাব-রেজিষ্ট্রার মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষর করেন। সেই প্রতিলিপি থেকে জানা যায়, ১৯৮৫ সালের ঢাকা সদর সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে রেজিষ্টারকৃত ১৭০নং দলিলের ভলিয়মে ১১২ নম্বর পৃষ্ঠায় ৮৫৯৭ নম্বর দলিলটি লিপিবদ্ধ রয়েছে। এখানে দলিল গ্রহীতা হিসেবে নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার মুক্তি গ্রামের নোয়াব আলীর ছেলে জাকির হোসেনের নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে। একই অফিসে ১৯৮০ সালের রেজিষ্ট্রিকৃত ২৬১২৭ নম্বর দলিলটি ৩৯৭ নম্বর ভলিয়মের ২৩২ নম্বর থেকে ২৩৫ নম্বর পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ রয়েছে। সেখানে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার বড়বাইমা গ্রামের এনাতুল্লাহর ছেলে সবুতুল্লাগংদের নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে। বাস্তবতার সাথে এ তথ্যের কোন মিল নেই। তাই ২০১৪ এর বিধি ১০৯ অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আদালতে সুপারিশ করেন সাব-রেজিষ্ট্রার মাহবুবুর রহমান।
এদিকে পূর্বাচল উপশহর আর আশালয় হাউজিং প্রকল্পের কারনে পিতলগঞ্জ, মোগলান, জাঙ্গীর, গুতিয়াবোসহ আশপাশের এলাকার জমির দাম এখন তুঙ্গে। চাহিদা অনুযায়ী পূর্বাচলে প্লট না পেয়ে প্লট বঞ্চিতরা এর আশেপাশে জমি কেনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাতে সেখানে জমির চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। সে কারনে ভূমিদস্যুরা জমি হাতিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। সক্রিয় হয়ে ওঠেছে একাধিক জালিয়াত চক্র। জমির আসল মালিককে আড়ালে রেখে একজনের জমি অন্যের নামে রেজিষ্ট্রি করে হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। হারিন্দা গ্রামের মিছির আলী জাল জালিয়াত সংঘবদ্ধ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন।
পিতলগঞ্জ গ্রামের কৃষক আব্দুর রউফ বলেন, দলিল ও জালিয়াত চক্রের দৌরাত্ম এতই বেড়েছে যে, যাদের জমি আছে তাদেরকে আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
জাঙ্গীর গ্রামের ব্যবসায়ী আলী আকবর বলেন, জলিয়াত চক্রের সদস্যরা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে আসাধু রেকর্ডকিপার ও নকল নবিশের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মিছির আলী বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সঠিক কাগজপত্র দিয়েই তিনি আদালত থেকে রায় পেয়েছেন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
আশালয় আবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত করে জাল দলিল সৃজনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যথায় সাধারণ মানুষের জমি জালিতায় চক্রের সদস্যরা আতœসাত করে নিবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে জালিয়াত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি