1. abukowsarmithu@gmail.com : abuko wsarmithu : abuko wsarmithu
  2. admin@dainikgonotontro.com : gontadmin :
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বেনাপোল কাস্টমস হাউজে কলমবিরতি আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক কক্সবাজারে কোস্ট গার্ড অভিযানে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা মূল্যের ২ হাজার ৫ শত কেজি সামুদ্রিক মাছ জব্দ তীব্র গরমে পথচারীদের জন্য ফ্রি শরবত বিতরণ সমালোচনা করা সহজ, সমালোচিত হওয়া কঠিন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ছাত্রদলের তিন নেতা গ্রেপ্তার। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে ঈমামদের অনুদান প্রদান ভারতে ৩-৫ বছর কারাভোগের পর দেশে ফিরল বাংলাদেশি দুই নারী-পুরুষ চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা চট্টগ্রামের পতেঙ্গার আবাসিক হোটেলগুলোতে অবাধে চলছে অনৈতিক কার্যকলাপের রমরমা ব্যণিজ্য! দিনাজপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পরিবারের মাঝে সঞ্চয়পত্র বিতরণ

সমালোচনা করা সহজ, সমালোচিত হওয়া কঠিন

  • প্রকাশিত : বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
  • ৩৬ বার পাঠ করা হয়েছে

মোঃ হাসানুর জামান বাবু

কোনটা বেশি শক্তিশালী? সমালোচনা করা নাকি সমালোচিত হওয়া। এটা নিয়ে অনেক যুক্তি তর্ক, মত-মতবিরোধ, ঠান্ডা লড়াই থাকতে পারে। তবে সমালোচনা করা সহজ, সমালোচিত হওয়া কঠিন। এই গভীর তত্ত্বের মর্মটা উপলব্ধি করতে গিয়ে কোনো একটা জায়গায় থামতে হয়। কারণ জীবন জমাট বাধা বরফের মতো কঠিন এক অদেখা দহনের প্রতীক, যা মানুষের বুকে তিলে তিলে ক্ষত তৈরি করে মানুষকে বুঝিয়ে দেয় সে মানুষের দ্বারা কতটা সমালোচিত।

সমালোচনার দুষ্ট চক্রে নিগৃহীত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত হয়তো এভাবেই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষটা সমালোচিত হতে হতে একদিন বিশ্বময় আলোচিত হয়ে উঠে। আলোচিত হতে হতে একদিন আলোকিত হয়ে উঠে। কেননা যে মানুষ যত কোনঠাসা সে মানুষের ভিতরের পুঞ্জীভূত ঘুমন্তশক্তি তত আপন শক্তিতে বেরিয়ে আসার ক্ষমতা বেশি। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। প্রকৃতি চিনে, জানে ও বুঝে সেই নেতিবাচক শক্তিতে ভর করা বিবেকহীন সমালোচকদের। তাদেরও প্রকৃতি সীমা লঙ্ঘনের সময় দেয় টুকরো টুকরো অস্থিরতার ট্রাজেডির উপাখ্যান লিখে।

এমন করেই প্রকৃতি অস্থিরতায় জ্বলতে জ্বলতে কোনো একটা সময়ে সহনশীলতার আবরণ থেকে বের হয়ে এসে চিৎকার করে বলে উঠে তোমাদের ঘৃণা করতেও ঘৃণা হয় আমার। কারণ সব সমালোচনা, সমালোচনা হয়ে উঠেনা | যে সমালোচনায় স্বার্থ থাকে, ঈর্ষা থাকে, ঘৃণা থাকে, যুক্তিহীন ক্ষোভ থাকে, তা কখনো সমালোচনা হয়ে উঠেনা | বরং তা হয়ে উঠে দীপ্যমান সূর্যের আলোক রশ্মিকে টেনে ধরার মতো অসহিষ্ণুতা। নিজে না পারার অক্ষমতা থেকে হতাশা আর মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়া মানুষের তৈলচিত্র যেন তা।

তবে সূর্যের আলোকে থামিয়ে দিয়ে তার গতি রোধ করবে এমন সাহস কি সমালোচকদের আছে। সূর্যের আলো মানে সমালোচিত মানুষ। যে পুড়ছে প্রতিদিন সমালোচকদের অর্থহীন কথায়, যুক্তিহীন মনস্তত্বে। এপিজে আব্দুল কালাম আজাদ পুড়ে পুড়ে জীবন গড়া একটা মানুষ। মায়ের হাতের পোড়া রুটি খেয়ে বাবার কাছে যিনি শিখেছেন সমালোচনা নয়, উদারতা আর মহত্ব দিয়ে জীবনবোধ তৈরী করতে হয়। তিনি ভেবেছেন তাই একটু অন্যভাবে। বলতেও পেরেছেন মন খুলে এভাবে “তুমি যদি সূর্যের মতো আলো ছড়াতে চাও, তাহলে আগে সূর্যের মতো পুড়তে শেখো”।

সমালোচনা করতে যোগ্যতা লাগেনা, সমালোচিত হতে যোগ্যতা লাগে। সেটি ভালো হোক কিংবা খারাপ। নিন্দুক কি তবে সমালোচক? যদি তাই হয়, তবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বদান্যতা ও শুভশক্তির উৎস এখানেই যে, তিনি এদের পরম বন্ধু বলেছেন | যেমনটি তার কবিতার ছত্রে ছত্রে একটা বাষ্পরুদ্ধ বিস্ময় চমকিত হয়ে বলেছে, “নিন্দকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল, যুগ জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আঁলো। সবাই মোরে ছাড়তে পারে, বন্ধু যারা আছে, নিন্দুক সে ছায়ার মত থাকবে পাছে পাছে। বিশ্বজনে নিঃস্ব করে পবিত্রতা আনে, সাধক জনে নিস্তারিতে তার মত কে জানে? বিনামূল্যে ময়লা ধুয়ে করে পরিষ্কার, বিশ্বমাঝে এমন দয়াল মিলবে কোথা আর? নিন্দুকে সে বেঁচে থাকুক বিশ্ব হিতের তরে; আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে।”

কবিকেও এমনটা ভাবতে হয়েছে। কারণ নেতিবাচক চিন্তা দ্বারা পুষ্ট মানুষ অগঠনমূলক সমালোচনাকে তাদের অস্ত্র বলে মনে করে। তখন ঠিক এটা সমালোচনা না হয়ে নিন্দুক চরিত্র ধারণ করে। যুক্তি, বিজ্ঞান, দর্শন, অকাট্য সত্য কোনকিছুতে তারা তোয়াক্কা করেনা। বিশ্বাসঘাতকতার মুখ আর মুখোশ তাদের অমানুষ বানায়। ভাবনাটা এমন তারাই ঠিক আর সব বেঠিক। তারপরও কবি অন্ধকারের ভিতর থেকে আলো খুঁজেছেন। কারণ তিনি যে উদার, তিনি যে মহান। তিনি বিশ্বাস করেন, অন্ধকার আছে বলেই পৃথিবীতে আলোর অস্তিত্ব আছে।

একটা লেখায় পেলাম- “সমালোচনা করতে যোগ্যতার প্রয়োজন হয়না, যে কেউ সমালোচনা করতে পারে। সমাজের সবচেয়ে অযোগ্য মানুষ গুলোরই প্রধান হাতিয়ার হলো অপরের ভালো-মন্দ সবকিছুতে নির্বিচারে সমালোচনা করা। অপরদিকে সমালোচিত হতে হলেও যোগ্যতার প্রয়োজন আছে।কেউ যখন তার যোগ্যতা দিয়ে নতুন বা উদ্ভাবনী কিছু করবে তখন ই একদল অযোগ্য লোকের আতে ঘা হয়ে লাগে এবং সমালোচনা শুরু করে।”

কথাটা মিথ্যে নয়, অমোঘ সত্য। যারা সমালোচনা করার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করছে বলে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন, তারা পরোক্ষভাবে সমালোচিতদের পরম উপকার সাধন হয়তো করে ফেলছে। কিন্তু সেটা বোঝার মতো মাথাটা তাদের যে জায়গাটাতে থাকা দরকার ছিল সেখানে হয়তো নেই। আজকের সমাজে বুদ্ধিবৃত্তিক সমালোচনার দৈন্যদশা চলছে।

গঠনমূলক সমালোচনার জায়গায় অগঠনমূলক সমালোচনার ধজ্জাধারীদের বাড়টাও বেড়েছে অনেক। তবে সেটা যত বেড়েছে সমালোচিত মানুষদের ইতিবাচক জেদটাও তত বেড়েছে। ফলে দিন দিন ইলোজিক্যাল সমালোচনাকারীরা পিছিয়ে পড়ছে আর দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সমালোচিতদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে। সমালোচনা মানুষকে সাময়িক সুবিধা দেয় হয়তো তবে তা মানুষের ব্যাক্তিত্বও ধ্বংস করে দেয়। শক্ত মেরুদণ্ডে পচন ধরায়। ইতিহাস তাই বলছে।

সমালোচিতরা থেমে থাকেনা। এক একটা অবরুদ্ধ নগরের কংক্রিটের দরজা ভেঙে এগিয়ে যায় তাদের অভিষ্ঠ লক্ষ্যে। আর সমালোচনাকারীরা আটকে যায় নিজেদের বানানো অবরুদ্ধ নগরে। পৃথিবী সমালোচনাকারীদের কখনো মনে রাখেনা। তবে সমালোচিতরা সময়ের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে ইতিহাস হয়ে যায়।

লেখক:- মিডিয়া কর্মীও ক্রীড়া সাংস্কৃতিক সংগঠক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি